শচীন দেববর্মন (অক্টোবর ১, ১৯০৬ – অক্টোবর ৩১, ১৯৭৫) ছিলেন প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী। তার পুত্র রাহুল দেব বর্মন ভারতের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক এবং সুরকার ছিলেন। তার ছাত্রী এবং পরবর্তীতে সহধর্মিনী মীরা দেব বর্মন নিজেও একজন সার্থক গীতিকার ছিলেন। তাঁর জন্ম কুমিল্লায়, ত্রিপুরার রাজবংশে। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেব বর্মনের কাছে সংগীত শিক্ষা শুরু করে। তৎকালীন ত্রিপুরার অন্তর্গত কুমিল্লার রাজপরিবারের ৯ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেব বর্মন ছিলেন একজন সেতারবাদক এবং ধ্রূপদী সঙ্গীতশিল্পী। তিনি ছিলেন শচীন দেব বর্মনের প্রথম শিক্ষক। এরপর তার সঙ্গীত শিক্ষা চলে উস্তাদ বাদল খান এবং বিশ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে। ধ্রূপদী সঙ্গীতের এই শিক্ষা তার মধ্যে সঙ্গীতের মৌলিক জ্ঞান সঞ্চারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এই শিক্ষা তার পরবর্তী জীবনের সুর সাধনায় প্রভাব বিস্তার করেছিল। পরবর্তীতে তিনি উস্তাদ আফতাবউদ্দিন খানের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ১৯২০ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন। ১৯২২ সালে ঐ কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯২৩ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯২৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তে এমএ তে ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে কলকাতা বেতারে তিনি প্রথম গান করেন। ১৯৩২ সালে তার প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড বের হয়। ৩০ এর দশকে তিনি রেডিওতে পল্লীগীতি গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পূর্ব বাংলা এবং উত্তর-পূর্ব বাংলার পল্লীগীতির উপর তাঁর বিশেষ ঝোঁক ছিল। ১৯৩৭ সালে রাজগী নামক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার সংগীত পরিচালনা জীবনের শুরু। ১৯৫৮ সালে ভারতের সংগীতে নাটক একাডেমি এবং এশিয়ান ফিল্ম সোসাইটি লন্ডন থেকে সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার হতে পদ্মশ্রী খেতাব লাভ করেন। ১৯৪৪ সাল থেকে স্থায়ী ভাবে বোম্বে তে বসবাস করতে শুরু করেন।