শওকত ওসমান
(Sowkot Osman) তাঁর পৈতৃক নাম শেখ আজিজুর রহমান। নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, রাজনৈতিক লেখা, শিশু-কিশোর সাহিত্য সর্বত্র তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তিনি ছিলেন এক উচ্চকিত কণ্ঠের অধিকারী। জন্ম -১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।বাংলাদেশের একজন চিন্তক, লেখক ও কথাসাহিত্যিক। পিতা শেখ মোহাম্মদ এহিয়া, মাতা গুলজান বেগম। পড়াশোনা করেছেন মক্তব, মাদ্রাসা, কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। কিন্তু একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অফ কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছা অবসরে যান। চাকরি জীবনের প্রথমদিকে কিছুকাল তিনি ‘কৃষক’ পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেন। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন 'অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ'। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে।বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনে জীবনব্যাপী অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার - এই তিনটিতেই ভূষিত হয়েছিলেন। ক্রীতদাসের হাসি তাঁর একটি জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস। তাঁর জনপ্রিয় গ্রন্থ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ জননী, জাহান্নম হইতে বিদায়, বনী আদম, ওটেন সাহেবের বাংলো, কালরাত্রি খ-চিত্র, মুজিবনগর, দুই সৈনিক ও অন্যান্য। মৃত্যু -১৪ মে ১৯৯৮।