মা কোথায়
পরিচিতি
মাত্র দেড় বছর বয়সে মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এক মানবসন্তানের করুণ কাহিনি। পরিণত বয়সে মা-বাবাকে খুঁজতে এসেছে হল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে। প্রতিবছর আসে, পাঁচ বছর ধরে চলছে তার এই খুঁজে ফেরা। তাদের সে খুঁজে পাচ্ছে না। তবু তাকে আসতেই হয়। বারে বারে, ফিরে ফিরে।
‘হ্যাঁ, আমি হয়তো খেতে না পেয়ে মরে যেতাম। হ্যাঁ, এটা আমার সৌভাগ্য যে আমাকে হল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল; আমি সেখানে খাবার পেয়েছি, যত্ন পেয়েছি, শিক্ষা পেয়েছি, চিকিৎসা পেয়েছি, সবকিছু পেয়েছি। কিন্তু আজ আমি এখানে কেন? কেন আমাকে বারবার আসতে হয়? তাদের কাউকেই খুঁজে পাব না জেনেও কেন বারবার আসতে হবে? যদি আমার মা আমাকে বলত, দ্যাখ, তুই যদি আমার সঙ্গে থাকিস, তাহলে খেতে না পেয়ে মরে যাবি, আর যদি অন্য লোকদের সঙ্গে অন্য দেশে চলে যাস, তাহলে বেঁচে থাকবি, খেতে-পরতে পাবি, বড়লোক হবি, যদি সে আমাকে বলত, তুই কোনটা চাস? আমি তাকে বলতাম, ওকে, লেট মি ডাই উইথ ইউ, ডোন্ট থ্রো মি অ্যাওয়ে!’ যে মায়ের মুখ সন্তানের মনেই পড়ে না তাঁকে খুঁজে ফেরার ক্ষান্তিহীন, ক্ষমাহীন, করুণ কাহিনি মশিউল আলমের এই ছোট্ট উপন্যাস। সাবলীল, প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা এই কাহিনি পড়তে পড়তে পাঠক দেখতে পাবেন যেন সবকিছু ঘটছে তাঁর চোখের সামনেই; এই মানুষগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে অনুভব করবেন সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশায় ভরা তাদের সমগ্র জীবন। সত্য কাহিনির ছায়ায় রচিত এক চিরন্তন মানবিক দলিল।